ঢাকা ০১:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
Logo গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে বিক্ষোভ-সমাবেশ Logo চাটমোহরে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) পালন Logo আহত যুবদল নেতা দেখতে হাসপাতালে সাবেক এমপি Logo যুবদল নেতাকে কোপালেন আ.লীগের কর্মীরা Logo পাবনায় বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ২যাত্রী নিহত, আহত ৭ Logo সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল Logo মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে ঈশ্বরদীতে নিরাপত্তা প্রহরীকে হত্যা Logo ৫দিনব্যাপী ইউপি কার্যালয়ে তালা বদ্ধ ভাঙ্গুড়ায় জনতার বিক্ষোভের কারণে নিজ কার্যালয়ে ঢুকতে পারলেন না ইউপি চেয়ারম্যান Logo চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে হান্ডিয়াল ইউপি কার্যালয়ে তালা! Logo চাটমোহরেরএকই মাদ্রাসায় দু’জন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ!

এক হাজার টাকার জন্য বন্ধুকে খুন!

পাবনা প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৬:০২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪ ২৩৩ বার পঠিত

বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে যান আব্দুস সামাদ ওরফে স¤্রাট (২৮)। মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হলে মেরামত করতে দুই হাজার টাকা খরচ হয় তার বন্ধু আজাদ হোসেনের। তার মধ্যে,আজাদকে এক হাজার টাকা দেন স¤্রাট। বাকি এক হাজার টাকা পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। একপর্যায়ে পাওনা এক হাজার টাকা না দিয়ে বন্ধু আজাদকে হত্যা করেন স¤্রাট।
পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া এলাকার রাজমিস্ত্রি আজাদ হোসেন (২২) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্ত সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (১৭ মার্চ) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মাসুদ আলম। এর আগে,শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত আজাদ হোসেন দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। গ্রেপ্তার আব্দুস সামাদ ওরফে স¤্রাট একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,গত সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় আজাদ তার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরেও তার সন্ধান না পেয়ে পরের দিন বিকেলে পাবনা সদর থানায় জিডি করেন তার বাবা আব্দুল হাকিম। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় একটি লিচু বাগানে আজাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এরপরই ঘটনার তদন্তে মাঠে নামে সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি দল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজাদকে হত্যার কথা স্বীকার করেন সম্রাট।
পুলিশকে সম্রাট জানান, আজাদ এবং তিনি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং রাজমিস্ত্রি হিসেবে একসঙ্গে কাজ করতেন। প্রায় এক মাস আগে আজাদের মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে যান এবং দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে মোটরসাইকেল মেরামত বাবদ আজাদের দুই হাজার টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে, এক হাজার টাকা দেন সম্রাট। বাকি এক হাজার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। সেসময় থেকে আজাদকে কীভাবে হত্যা করা যায় সেই সুযোগ খুঁজতে থাকেন সম্রাট।
গত ১১ মার্চ রাতে আজাদকে কৌশলে একটি লিচু বাগানে নিয়ে যান সম্রাট। সেখানে কথাবার্তার একপর্যায়ে সম্রাট তার সঙ্গে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে আজাদের গলায় ও চোখের নিচে আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর গাছের শুকনা লতাপাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখেন। আর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেন। পরে আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল এবং রক্তমাখা জ্যাকেট নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পথিমধ্যে আজাদের মোবাইল ছয়ঘড়িয়া গ্রামের একটি পুকুরে ফেলে দেন।
এছাড়া, রক্তমাখা জ্যাকেট এবং মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট নিজের শোবার ঘরে রেখে মোটরসাইকেল নাটোরের লালপুর উপজেলার মোহরকয়া গ্রামে ফারুক শেখের বাড়িতে রেখে আসেন সম্রাট। গ্রেপ্তারের পর স¤্রাটের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে সঙ্গে নিয়ে নিহতের মোবাইল,মোটরসাইকেল,পরিহিত রক্তমাখা জ্যাকেট ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করে শনিবার (১৬ মার্চ) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন সম্রাট। পরে তাকে সদর থানার মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

ট্যাগস :

এক হাজার টাকার জন্য বন্ধুকে খুন!

আপডেট সময় : ০৬:০২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে যান আব্দুস সামাদ ওরফে স¤্রাট (২৮)। মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হলে মেরামত করতে দুই হাজার টাকা খরচ হয় তার বন্ধু আজাদ হোসেনের। তার মধ্যে,আজাদকে এক হাজার টাকা দেন স¤্রাট। বাকি এক হাজার টাকা পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। একপর্যায়ে পাওনা এক হাজার টাকা না দিয়ে বন্ধু আজাদকে হত্যা করেন স¤্রাট।
পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া এলাকার রাজমিস্ত্রি আজাদ হোসেন (২২) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও অভিযুক্ত সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (১৭ মার্চ) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মাসুদ আলম। এর আগে,শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত আজাদ হোসেন দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। গ্রেপ্তার আব্দুস সামাদ ওরফে স¤্রাট একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,গত সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় আজাদ তার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরেও তার সন্ধান না পেয়ে পরের দিন বিকেলে পাবনা সদর থানায় জিডি করেন তার বাবা আব্দুল হাকিম। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় একটি লিচু বাগানে আজাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এরপরই ঘটনার তদন্তে মাঠে নামে সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি দল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজাদকে হত্যার কথা স্বীকার করেন সম্রাট।
পুলিশকে সম্রাট জানান, আজাদ এবং তিনি ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং রাজমিস্ত্রি হিসেবে একসঙ্গে কাজ করতেন। প্রায় এক মাস আগে আজাদের মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে যান এবং দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরে মোটরসাইকেল মেরামত বাবদ আজাদের দুই হাজার টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে, এক হাজার টাকা দেন সম্রাট। বাকি এক হাজার টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই বন্ধুর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। সেসময় থেকে আজাদকে কীভাবে হত্যা করা যায় সেই সুযোগ খুঁজতে থাকেন সম্রাট।
গত ১১ মার্চ রাতে আজাদকে কৌশলে একটি লিচু বাগানে নিয়ে যান সম্রাট। সেখানে কথাবার্তার একপর্যায়ে সম্রাট তার সঙ্গে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে আজাদের গলায় ও চোখের নিচে আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর গাছের শুকনা লতাপাতা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখেন। আর হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেন। পরে আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল এবং রক্তমাখা জ্যাকেট নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান। পথিমধ্যে আজাদের মোবাইল ছয়ঘড়িয়া গ্রামের একটি পুকুরে ফেলে দেন।
এছাড়া, রক্তমাখা জ্যাকেট এবং মোটরসাইকেলের ডিজিটাল নম্বর প্লেট নিজের শোবার ঘরে রেখে মোটরসাইকেল নাটোরের লালপুর উপজেলার মোহরকয়া গ্রামে ফারুক শেখের বাড়িতে রেখে আসেন সম্রাট। গ্রেপ্তারের পর স¤্রাটের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাকে সঙ্গে নিয়ে নিহতের মোবাইল,মোটরসাইকেল,পরিহিত রক্তমাখা জ্যাকেট ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করে শনিবার (১৬ মার্চ) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন সম্রাট। পরে তাকে সদর থানার মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।