চাটমোহর এনায়েতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রইলেন অধ্যাপক রবিউল করিম
- আপডেট সময় : ০৪:০২:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৪১ বার পঠিত
নানা আলোচনা,সমালোচনার পর পাবনার চাটমোহর এনায়েতুল্লাহ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা পেলেন ওই মাদ্রাসার সহকারি অধ্যাপক মোঃ রবিউল করিম। মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মাহফুজা সুলতানা এই নির্দেশনা দিয়েছেন। গত ৫ নভেম্বর বিকেলে তিনি মাদ্রাসা পরিদর্শনে আসেন। এসময় চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেদুয়ানুল হালিম,সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল,মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মগরেব আলী উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কক্ষে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রবিউল করিম ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মওলানা আবু ইসহাকের সাথে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ইউএনও,এসি (ল্যান্ড) ও মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যোৎসাহী সদস্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ অন্যান্য শুন্যপদে নিয়োগ,ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে বিগত গভর্নিং বডির রেজুলেশন নিয়ে আলোচনা করার পর বিগত কমিটি কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি অধ্যাপক রবিউল করিমকেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে শিক্ষকদের কক্ষে গিয়ে সকল শিক্ষক ও কর্মচারির উপস্থিতিতে এডিসি (শিক্ষা) মাহফুজা সুলতানা রবিউল করিমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষার মান উন্নয়নে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহবান জানান। পরিদর্শন শেষে তিনি মাদ্রাসার মাঠে উপস্থিত সংবাদকর্মী ও এলাকার মানুষদের সাথে কোন কথা বলেননি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান।
সম্প্রতি চাটমোহর এনায়েতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষসহ কয়েকটি পদে লোক নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মওলানা আবু ইসহাক অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। ফলে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ ছাড়েন। তৎসময়ে গভর্নিং বডি নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সহকারি অধ্যাপক রবিউল করিমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে রেজুলেশন করেন। কিন্তু আবু ইসহাক তাকে দায়িত্ব বুঝে না দিয়ে নিজেই স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখেন। বারবার দায়িত্ব প্রদানের কথা বলা হলেও মওলানা আবু ইসহাক সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের নির্দেশনার কথা বলে চেয়ার দখলে রাখেন। অবশেষে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসী ও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মওলানা আবু ইসহাককে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়ে রবিউল করিমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুয়োগ সৃুিষ্ট করে দেন। রবিউল করিম তথন থেকেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে আবু ইসহাক থানা,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেন এবং মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকেন। গত দেড় মাসের অধিক সময় মওলানা আবু ইসহাক মাদ্রানায় কোন প্রকার ছুটি না নিয়েই অনুপস্থিত রয়েছেন। মাদ্রাসার শিক্ষক ও কর্মচারিরা মওলানা আবু ইসহাকের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির ফিরিস্থি উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন।
মওলানা আবু ইসহাকের দাবি জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে তিনিই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকবেন। তাকে জোরপূর্বক মাদ্রাসা থেকে বের করে দিয়ে রবিউল করিম চেয়ার দখল করেছেন। মানা হয়নি সরকারি নির্দেশনা। তিনি বলেন,নিয়োগকালীন সময়ের জন্য রবিউল করিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগ সংক্রান্ত যে সকল কার্যক্রম করা হয়,তার মেয়াদ থাকে ৬ মাস। ৬ মাস পর আগের নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। ফলে সে সময় দায়িত্বে থাকা রবিউল করিম স্বপদে ফেরত যাবেন। কিন্তু এখানে তা মানা হচ্ছেনা।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রবিউল করিম বলেন,তাকে সম্মান জানিয়ে বারবার দায়িত্ব বুঝে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। তিনি তা করেননি। চরম স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন। আমি বাধ্য হয়ে শিক্ষক ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দায়িত্ব নিয়েছি। তিনি দেড় মাসের অধিক সময় মাদ্রাসায় অনুপস্থিত,তারপরও বেতন দেওয়া হয়েছে। তিনি কোন প্রকার ছুটি নেননি। আমার কাছে ছুটির বিষয়ে কোন আবেদন নেই। তিনি বলেন,মওলানা আবু ইসহাক বিভিন্ন স্থানে মিথ্যে কথা বলছেন ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যা কারোই কাম্য নয়। সবকিছু পর্যালোচনা করে এডিসি স্যার আমাকে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মগরেব আলী বলেন,নিয়ম ও বিধি মোতাবেক এডিসি মহোদয় সবকিছু করেছেন। তিনি কোন অনিয়ম করেননি। বিধিমোতাবেক মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে রবিউল করিম দায়িত্ব পালন করবেন। এনিয়ে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই।