পাল্টা চ্যালেঞ্জ দিলেন জিএম কাদের, ‘মরতে চাই, তবুও জাপার সমাবেশ হবে’
- আপডেট সময় : ০৪:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ ৬ বার পঠিত
জাতীয় পার্টির নামে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে এবং নানা ষড়যন্ত্র করছে জানিয়ে দলীয় অফিসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার হামলা ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দুই তারিখ আমাদের সমাবেশ কর্মসূচি চলবে। আমাদের কর্মসূচি ও আন্দোলন সবই চলবে নিয়মতান্ত্রিক এবং অহিংসভাবে’। জাতীয় পার্টির অফিসে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টিকে কোনো ধরনের সমাবেশ করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। জাতীয় পার্টি কর্মসূচি পালনের পাল্টা চালেঞ্জ দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা তা যেকোনো মূল্যে রূখে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ দেয়। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসে জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্র জনতার পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা কাকরাইল অফিসে আগুন দেয় ও ভাঙচুর চালিয়ে জাপা অফিস দখলে নেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেন জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি যেকোনো মূল্যে দুই তারিখ জাতীয় পার্টির সমাবেশ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা মরতে এসেছি, আমরা মরতে চাই, কত মারবে তোমরা আমরা দেখতে চাই। তারপরও আমাদের সমাবেশ হবে।’
‘আল্লাহ আমাদের প্রটেকশন দিচ্ছে বলে এখনো বেঁচে আছি, অন্য কারও প্রটেকশনে নয়। বিচারের জন্য যদি আল্লাহর সাহায্যের দিকে চেয়ে থাকতে হয় তাহলে দেশ কীভাবে চলবে। আমরা একদিনের ডেমোক্রেসি চাই না। সব সময়ের ডেমোক্রেসি চাই। আমরা চাই সরকার হবে-অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল’।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের জনগণের পাশে ছিলাম, সবসময় থাকবো। আমার পরবর্তী প্রজন্ম এলেও জাতীয় পার্টি জনগণের পাশে থাকবে এবং একইভাবে এগিয়ে যাবে। আমাদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে জিএম কাদের বলেন, ‘তারা যা বলে তা-ই সঠিক, বাকি সবাই ভুল। তারা এখন বিচারকার্যেও গিয়ে বাধা দেয়। তাদের ইচ্ছা হলো আমাদের অফিস ভেঙে দিয়ে গেল। কারও যদি ভুল হয় সেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার অনেক উপায় আছে, তাই বলে তাকে ধ্বংস করে দেবেন, এটা কেমন হবে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাতীয় পার্টি শুরু থেকে সমর্থন জানিয়েছে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘তাদের পক্ষে সে সময় অনেক কথা বলেছি, বিবৃতি দিয়েছি। যে কারণে আমার অনেক ক্ষতিও হতে পারতো। কিন্তু এসব কিছুর পরোয়া আমরা করিনি। তারপরও আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় অপবাদ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সবাই বলে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দোসর। কিন্তু কিভাবে দোসর হলাম। আমরা শেখ হাসিনার কোনো ধরনের জনবিরোধী কাজের সঙ্গে ছিলাম না। আমরা বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগের জনবিরোধী ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আওয়ামী লীগের দলীয়করণের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম।’
‘২০১৮ সালে সব দল শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তখন কি সব দল শেখ হাসিনার সরকারকে বৈধতা দেয়নি। এটা কি একা জাতীয় পার্টি দিয়েছিল,’ প্রশ্ন রাখেন কাদের।
জাতীয় পার্টি একটি জনগণের রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি সবসময় জনবান্ধব দল ছিল, এখনো আছে এবং আগামীতেও থাকবে। হয়তো সারা বাংলাদেশে আমাদের অবস্থান কিছুটা কম আছে, তবুও আমরা টিকে আছি। চাপে গর্তে ঢুকে গেলেও বারবার জাতীয় পার্টি উঠে দাঁড়ায়, এটাই অনেকের সহ্য হয় না। যে কারণে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়।
দেশ এখন ভালো অবস্থায় নেই মন্তব্য করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, শেখ হাসিনা দেশটাকে যেভাবে বিভক্তি করেছিলেন এখন একইভাবে বিভক্তি করা হচ্ছে। এখন হাজার হাজার মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও স্ত্রী শেরিফা কাদের প্রমুখ